২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার,রাত ১২:৪৪

দুর্বল দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানোর তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তীব্র চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশসহ অনেক দেশ স্বল্পোন্নত মর্যাদা থেকে গ্র্যাজুয়েশন হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে ১৩ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া, বারবার জলবায়ুগত ধাক্কা মোকাবিলা এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা সামাল দেওয়া।

এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের বাজেট হ্রাস করা বা সরকারি উন্নয়ন সহায়তা সংকুচিত করা হিতে বিপরীত হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এর পরিবর্তে, বিশ্বকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সহায়তা সম্প্রসারণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান এবং উচ্চতর দুর্বলতার মুখোমুখি দেশগুলোর জন্য ন্যায়সঙ্গত রূপান্তর নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘের সামাজিক ব্যবসা, যুব ও প্রযুক্তি বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সাইড ইভেন্টে মূল বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘বৈশ্বিক সংঘাতের অবিরাম ছায়া বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলো বিচ্ছিন্ন ট্র্যাজেডি নয় – এগুলো সীমান্ত পেরিয়ে ঢেউ তোলে, অর্থনীতিকে ব্যাহত করে, খাদ্য নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে এবং মানব জীবনকে ধ্বংস করে। এই ধরনের আন্তঃসংযুক্ত সঙ্কটের মুখে, আমরা পুরনো সমাধানের আশ্রয় নিতে পারি না। আমাদের এখন যা দরকার তা হলো বহুপাক্ষিক কূটনীতি এবং গভীর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নবায়ন করা।’

তিনি বলেন, ‘আমি যখন প্রথম এই অনুষ্ঠানে যোগ দিই, তখন আমি কেবল প্রফেসর ইউনূস হিসাবে এসেছিলাম। গতবছর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমবারের মতো আমাকে স্বাগত জানানো হয়েছিল এবং আজ আমি আবারও সেই ভূমিকায় আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমি যে উপাধি রাখি না কেন, আমার লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে। সেটি হলো এমন একটি বিশ্ব তৈরি করা যেখানে সুযোগ, মর্যাদা এবং স্থায়িত্ব সবার নাগালের মধ্যে থাকবে।”

ড. ইউনুস বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের দাবানল পৃথিবীকে পুড়িয়ে দেয়। বৈষম্যের ব্যবধান আরও গভীর হয়। সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে এবং ন্যায়বিচার ও শান্তির জন্য সংগ্রাম আমাদের মানবতার পরীক্ষা করে। এই সংকটগুলো বিচ্ছিন্ন নয়। তারা একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে – একটি ভঙ্গুর টেপেস্ট্রির সুতো, একে অপরের দিকে টানছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এমন একটি অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে যা মানুষের কল্যাণ, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং পরিবেশগত তত্ত্বাবধানকে সম্পদের সংকীর্ণ সঞ্চয়ের ওপরে রাখে। এটি কোনও ইউটোপিয়ান আদর্শ নয়। এটি একটি প্রয়োজনীয় বিবর্তন। আর এই নতুন অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সামাজিক ব্যবসা।’

  • শেয়ার করুন