প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২২
নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লিপাত্র) স্থাপন করা হয়েছে৷ এর মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এগিয়ে গেলো ৷
বুধবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের উদ্বোধন করেন ৷ কোভিড পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন ৷ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি ছিলেন ৷
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ৷ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এই প্রকল্পের নির্মাণ সংস্থা রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ ৷
রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুমতি চান অ্যালেক্সি লিখাচেভ ৷ প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনুমতি দেওয়ার পর রিঅ্যাক্টর ভবনে সেটি স্থাপন করা হয় ৷ এ সময় রিঅ্যাক্টর ভবনে ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর ৷ একটি ক্রেনের মাধ্যমে রিঅ্যাক্টরটি নির্দিষ্ট স্থানে বসানো হয় ৷ এরপর জাতীয় স্লোগান জয় বংলা ধ্বনি উচ্চারিত হয় সবার কষ্ঠে ৷
এই রিঅ্যাক্টর স্থাপনের সার্বিক প্রস্তুতি এর আগেই সম্পন্ন করা হয় ৷ রিঅ্যাক্টর স্থাপন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ৷ এর আগে গত বছর ১০ অক্টোবর ইউনিটের রিঅ্যাক্টর স্থাপন করা হয় ৷
দেশের প্রথম এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরুর পরই বাংলাদেশ বিশ্ব পরমাণু ক্লাবের ৩১তম সদস্য হয় ৷ পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে আন্তর্জাতিক পারমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) অনুমোদন নিয়ে এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ৷
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর ইউনিয়নে রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, আর্থিক ও প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সার্বিক সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল প্রকল্প ৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে এটি অন্যতম প্রধান প্রকল্প ৷ এ প্রকল্পে স্থাপন রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বশেষ প্রযুক্তি থ্রি জি(প্লাস) ভিভিইআর ১২০০ মডেলের রিঅ্যাক্টর করা হয়েছে ৷ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) প্রকৌশল শাখা এ্যাটমোস্ত্রয় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ৷ প্রতিটি ইউনিটে ১২০০ মেগাওয়াট করে মোট ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এই প্রকল্পে ৷ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির স্থায়ীত্ব হবে ৬০ বছর ৷ এরপর এটির মেয়াদ ২০ বছর বাড়িয়ে ৮০ বছর করা যাবে ৷ এরপর পুনরায় এক্সটেশন করে আরও ২০ বছর বাড়ানোর ব্যবস্থা করা যাবে ৷ সব মিলিয়ে দুই ধাপে ২০ বছর করে বাড়িয়ে মোট ১০০ বছর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে থাকতে পারবে ৷ এই প্রকল্পের লাইফ টাইম (পুরো সময়) জ্বালানি ইউরেনিয়াম সরবরাহ করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সরবরাহ কোম্পানি টিভিইএল ৷ আগামী বছর অক্টোবরের মধ্যে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আসা শুরু হবে ৷