৯ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,দুপুর ২:৩৭

বাংলাদেশে এসির ব্যবহার বেড়েই চলছে, এতে নগরে তাপ বৃদ্ধি ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২২

  • শেয়ার করুন

ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে লাগামহীনভাবে বাড়ছে এসির (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) ব্যবহার। নগরাঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়ায় মানুষ আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্পকারখানা, প্রাতিষ্ঠানিক ভবনে এসির ব্যবহার বাড়িয়ে দিচ্ছে। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ চাহিদা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। আর ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। গতকাল শুক্রবার ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) আয়োজিত ভার্চুয়াল নগর সংলাপে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

আইপিডি পরিচালিত নগর সংলাপে ‘ভবনে এসি ব্যবহারজনিত বিদ্যুৎ চাহিদা ও নগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এসির ব্যবহার বেড়েই চলছে। এতে নগরে তাপ বৃদ্ধি ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। কার্যকর নগর পরিকল্পনা, ইমারত বিধিমালা এবং এসি ব্যবহারের সঠিক নীতিমালা থাকলে বিদ্যুতের ওপর চাপ কমানো যেত। শুধু ঢাকাতেই প্রতি বছর এসির ব্যবহার ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে।’

ড. আদিল বলেন, ‘নগর এলাকায় কনক্রিটের কাঠামো বেড়ে যাওয়ায় বিগত কয়েক দশকে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে। এসি-সংক্রান্ত নীতিমালা না থাকায় ভবন নির্মাতাদের চাপে ২৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার এসি সিস্টেম স্থাপন করা যাচ্ছে না। অথচ এটা করলে ভবনের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ চাহিদা কমানো সম্ভব হতো। এসির তাপমাত্রা চার-পাঁচ ডিগ্রি বাড়িয়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ চাহিদা কমানো সম্ভব। শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের চলমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলা করা যাবে না।’

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘নগর এলাকায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্লটে নির্মিত উঁচু ভবনগুলোতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের সুযোগ থাকে না। এতে মানুষ এসি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে। ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত ব্লক ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে উন্মুক্ত স্থান ও ভবনে আলো-বাতাসের প্রবাহ বাড়িয়ে এসির ব্যবহার কমানো যায়। এমনটা না হলে ঢাকা অবাসযোগ্য হয়ে পড়বে এবং এখান থেকে মানুষ অন্যত্র চলে যাবে।’

সংলাপে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার, পরিকল্পনাবিদ ও উন্নয়ন গবেষক মো. রেদওয়ানুর রহমান, আইপিডির পরিচালক পরিকল্পনাবিদ ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক, প্রকৌশলী জামিল আহমেদ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফরহাদুর রেজা ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্থপতি শাহরিয়ার ইকবাল রাজ বক্তব্য দেন।

  • শেয়ার করুন