৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,রাত ১০:৪৭

বাসায় ঢুকে ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, আহত মা আইসিইউতে

প্রকাশিত: মে ১০, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাসায় ঢুকে রাবেয়া আক্তার নামে এক কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন এক গৃহশিক্ষক। এ সময় বাধা দিলে রাবেয়ার মা ও বোনদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়। গত সোমবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন রাবেয়ার মা ইনসুরেত নেছা, বোন হাবিবা, খাদিজা ও জান্নাত। তাদের মধ্যে ইনসুরেত নেছা বর্তমানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।

এদিকে ঘটনার পর থেকে ওই গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। সাইদুল পার্শ্ববর্তী টেকিবাড়ী সাকিনস্থ টেকিবাড়ী জামে মসজিদে ইমামতি করতেন এবং সেখানে ছোট ছেলেমেয়েদের কোরআন শেখাতেন। এ ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে গাজীপুর সদর থানায় একটি মামলা করেছেন নিহত ছাত্রীর বাবা।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রাবেয়ার বাবা কুমিল্লার হোমনার শ্রীমদ্দি এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ সালনা বাজারে একটি শোরুমে চাকরি করেন। সেখানেই সপরিবার বসবাস করেন। আর রাবেয়া ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। সম্প্রতি তার ছোট দুই বোন খাদিজা ও জান্নাতকে কোরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় মাদ্রাসাশিক্ষক সাইদুলকে গৃহশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন রাবেয়ার বাবা।

খাদিজা ও জান্নাতকে পড়ানো শুরু করলে একপর্যায়ে বড় বোন রাবেয়াকে বিয়ে করতে চান সাইদুল। এজন্য রাবেয়ার পরিবারের কাছে প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পরও রাবেয়াকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এক সময় পরিবারের সদস্যরা তাকে বাসায় এসে পড়ানোর জন্য নিষেধ করেন। এর পরও পথে রাবেয়াকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন সাইদুল। সেই জেরে গত সোমবার রাতে তিনি রাবেয়াদের বাসায় প্রবেশ করেন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাবেয়ার মাথায়, গলায়, হাতে, পায়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। তার চিৎকারে মা ও দুই বোন দৌড়ে রাবেয়া আক্তারের ঘরে গিয়ে দেখেন, সাইদুল ছুরি দিয়ে তখনো রাবেয়াকে ছুরিকাঘাত করছেন। এ সময় বাধা দিলে রাবেয়ার মা ও বোনদের আঘাত করে পালিয়ে যান সাইদুলকে। পরে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে রাতেই রাবেয়াকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে রয়েছেন তার মাও।

রাবেয়ার বাবা আবদুর রউফ জানান, সাইদুল আমাদের গৃহশিক্ষক ছিল। ছোট দুই মেয়েকে সে কোরআন পড়াত। আমার বড় মেয়েকে সে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে আমরা না করে দিই। এ কারণেই সে বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

রাবেয়াকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি ইতোমধ্যে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গাজীপুর সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। আসামি সাইদুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

  • শেয়ার করুন