৮ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার,রাত ৪:০৯

ছাত্রলীগের ৩০তম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের ঘোষণা আসতে পারে আজ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২২

  • শেয়ার করুন

ছাত্রলীগের ৩০তম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের ঘোষণা আসতে পারে আজ শুক্রবার। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা থেকে এই ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা। ২৯তম সম্মেলনের প্রায় সাড়ে চার বছর পর ‘সম্মেলনের ঘোষণা আসতে পারে—এমন খবরে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরাও বেশ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন।

 

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, সোহাগ-জাকির কমিটির মেয়াদ শেষে ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের আড়াই মাস পর ৩১ জুলাই রাতে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা হয়। সেখানে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক হন গোলাম রাব্বানী। কিন্তু চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে এক বছর পেরোতেই শোভন-রাব্বানীকে পদচ্যুত করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরে ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাদের ভারমুক্ত করা হয়। সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মেয়াদ দুই বছর হলেও জয়-লেখক তিন বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্বে রয়েছেন।

 

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, ২৯তম সম্মেলনের চার বছর পার হলেও সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করতে পারেননি দলের নেতারা। এর ফলে বড় সংকট দেখা দিয়েছে সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বে। সঠিক সময়ে সম্মেলন না হওয়ায় অনেক নেতার বয়স পার হয়ে গেছে। অনেক ছাত্রলীগ নেতা রাজনীতি ছেড়ে পড়াশোনায় মনোযোগী হয়েছেন। আবার অনেকে সরকারি-বেসরকারি চাকরির পাশাপাশি সংগঠনের পদেও রয়েছেন। অনেকে বিয়ে করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই এর মধ্যে রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়েছেন।

 

এদিকে সম্মেলনের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা। ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে দেশের কয়েকটি অঞ্চল বিশেষ গুরুত্ব পায়। আর সে কারণে এসব অঞ্চলের আওয়ামী লীগ নেতাদের পেছনে সময় ব্যয় করছেন পদপ্রত্যাশীরা। ছাত্রলীগের এবারের কমিটি আওয়ামী লীগ নেতাদের ভোটের মাধ্যমে হবে, নাকি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে, নাকি ভিন্ন কোনো উপায়ে তা নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তবে, কমিটি যেভাবেই হোক, সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তেই হবে, এমন প্রত্যাশায় দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করছেন। দলের সিনিয়র নেতার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নাম পৌঁছানোই পদ প্রত্যাশীদের একমাত্র উদ্দেশ্য। নাম পৌঁছানোর জন্য কেউ আবার কর্মসূচিকে বেছে নিয়েছেন।

 

অন্যদিকে, বিতর্কিতরা যাতে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে না আসতে পারে, সেজন্য কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা গোপনে কাজ করছে বলে জানা গেছে। যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সংগঠনবিরোধী কাজ করার অভিযোগ রয়েছে, তাদের আলাদা তালিকা করা হচ্ছে।

 

ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরাও চান বিতর্কিত কেউ দায়িত্বে না আসুক। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক মেহেদি হাসান তাপস বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, আওয়ামী পরিবারের সন্তান, সংগঠনের বিভিন্ন সংকট মুহূর্তে যারা সবসময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনে সামনে থেকে সব সমস্যা মোকাবিলা করতে পারবে; আমরা তাদের নেতৃত্বে চাই। আর সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সংগঠনের অভিভাবক। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই চূড়ান্ত।

 

সংগঠনের উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসেন বলেন, নেতাকর্মীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে, দুর্নীতি করে টাকা উপার্জন করবে না, চাঁদাবাজি করবে না, আমরা চাই এমন নেতাই নেতৃত্বে আসুক।

 

কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ছাত্রলীগের সম্মেলনের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, হ্যাঁ, আসতে পারে। ছাত্রলীগ তো আছেই, আরও যাদের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে, তাদের ব্যাপারেও আলোচনা হবে। সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হতে পারে।

  • শেয়ার করুন