প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৩
দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি নিয়েও আপত্তি রয়েছে তাদের। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে দলটি নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার চায়।
শনিবার (২৪ জুন) গুলিস্তানের একটি হোটেলে মতবিনিময় সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম জাতীয় সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করেন। ‘রাজনৈতিক সংকট উত্তরণ এবং একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে করণীয়’ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
জাতীয় সরকারের রূপরেখা প্রসঙ্গে চরমোনাই পীর বলেন, আপিল বিভাগের একজন বিজ্ঞ, সৎ, যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য বিচারপতিকে প্রধান করে নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতিনিধি নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন হবে। যারা জাতীয় সরকারে থাকবেন তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। জাতীয় সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে।
সংসদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবেন। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। বর্তমান মন্ত্রিসভার কেউই নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারে থাকতে পারবেন না।
নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখতে পাই—দলীয় সরকার, সামরিক সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনা সমর্থিত সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। বর্তমানে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এবং বিগত পদ্ধতিগুলোর ত্রুটির কারণে নিবন্ধিত সব দলের পরামর্শক্রমে ও অংশগ্রহণে জাতীয় সরকার গঠন করে তার অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে ইসলামী আন্দোলন মনে করে।’
মতবিনিময় সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ জমিয়তুল মুছলেহীনের আমির মাওলানা খলিলুর রহমান নেছারাবাদী, কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম মসীহ, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, খেলাফতে রব্বানী পার্টির চেয়ারম্যান মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুল লতিফ মাসুম, ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ উপস্থিত ছিলেন।