প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২
পল্লীর আভাস: সরকার ইউটিউবে নানা চ্যানেল খুলে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপি সিনিয়র নেতাদের নামে প্রতিনিয়ত কুৎসা রটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, সরকার ইউটিউবে নানা চ্যানেল খুলে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাকেসহ দলের সিনিয়র নেতাদের নামে প্রতিনিয়ত কুৎসা রটাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে কণ্ঠ নকল করে বিভিন্ন ধরনের বানোয়াট ফোনালাপ, কিসসা-কাহিনি বানিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। যার সঙ্গে সত্যতার কোনো বালাই নেই।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জন্য পাঁচ লাখ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নিয়োগ দিয়েছে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তারা সবসময় বিএনপির বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাতে লিপ্ত। আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যা, কাল্পনিক গল্প বানিয়ে কাটপিস তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে বা ছাড়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কুৎসিত কর্মকাণ্ড যেন দেখতে না পারে, এজন্য গুলি করে বিএনপির নেতাকর্মীদের অন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আবারও নিষ্ঠুর খেলায় মেতেছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা চোখ অন্ধকার করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাংবিধানিক অধিকার সভা-সমাবেশ করা। অথচ কর্মসূচিগুলোতে হামলা করে, গুলি চালিয়ে নেতাকর্মীদের হত্যার পাশাপাশি এখন শটগানের গুলি চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের চোখ অন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ভোলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে ছাত্রদল নেতা নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী মো. শাওন প্রধানকে হত্যা করেছে। এছাড়া নেত্রকোনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, বরগুনা, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, ঝালকাঠিতে পুলিশ শটগানের গুলি দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীসহ ছাত্রদল, যুবদলের কর্মীদের শরীর ও চোখ-মুখ ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে তারা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এরই মধ্যে অনেকে চোখ হারিয়েছে, পা হারিয়েছে, হাত হারিয়েছে কিংবা অসংখ্য গুলি শরীরে নিয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার পর শটগানের গুলি দিয়ে নেতাকর্মীদের পঙ্গু করে দেওয়ার আরেক নিষ্ঠুর নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে সরকার।
‘পুলিশকে ব্যবহার করে এটি একটি নতুন নিপীড়নের পথ অবলম্বন করা হয়েছে। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের আরেকটি নতুন ফর্মুলা। আমি এসব প্রতিহিংসামূলক নিষ্ঠুর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ ধরনের মরণঘাতি কর্মসূচি থেকে সরে আসার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন এখন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নেই। সারাদেশে আবারও বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িক চলছে। এ অবস্থায় মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরাতেই বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নামে বিভিন্ন অপপ্রচারে মেতে উঠেছে সরকার।