প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য। পহেলা বৈশাখ বাঙালির সম্প্রীতির দিন, বাঙালির মহামিলনের দিন। এদিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণে নব-অঙ্গীকারে। সারা বছরের দুঃখ-জরা, মলিনতা ও ব্যর্থতাকে ভুলে সবাইকে আজ নব-আনন্দে জেগে ওঠার উদাত্ত আহ্বান জানাই।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য। মোগল সম্রাট আকবর ‘ফসলি সন’ হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা সময়ের পরিক্রমায় আজ সমগ্র বাঙালির কাছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে। বাঙালির আত্মপরিচয় ও শেকড়ের সন্ধান মেলে এর উদ্‌যাপনের মধ্য দিয়ে। পহেলা বৈশাখের দিকে তাকালে বাঙালি তার মুখচ্ছবি দেখতে পায়। বৈশাখ আমাদের নিয়ে যায় অবারিতভাবে বেড়ে ওঠার বাতায়নে, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে, অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে।

তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষের এই বর্ণিল উদ্‌যাপন মানুষের মাঝে অনাবিল আনন্দ, উৎসাহ-উদ্দীপনা আর সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে আসে। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বাংলার লোকজ-সংস্কৃতির মূল্যবান অনুষঙ্গ যেমন- যাত্রাগান, পালাগান, পুতুলনাচ, হালখাতা, অঞ্চলভিত্তিক লোকসংগীত, খেলাধুলাসহ গ্রামীণ মেলা যেমন প্রাণ ফিরে পায়, তেমনি বাংলার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হয়ে ওঠে উজ্জীবিত। ব্যবসা-বাণিজ্যেও এর ইতিবাচক প্রভাব তাৎপর্যপূর্ণ। বাঙালি জাতিকে দাবিয়ে রাখা যাবে না, বাঙালি বীরের জাতি হিসেবে তার অর্জন ও অগ্রগতি চির ভাস্বর হয়ে থাকবে যুগ যুগান্তর।

সরকারপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক, উদারনৈতিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রের ভাবাদর্শে আজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন তারও মূলমন্ত্র জাতিগত ঐতিহ্য ও অহংকার। সেই আদর্শে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন, দেশ পুনর্গঠনে কাজ করেছে তাঁর অভিন্ন চেতনা। একইসঙ্গে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্রবাদ তথা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ তথা সুখী-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবারের বৈশাখ হবে আমাদের জন্য বিপুল প্রেরণাদায়ী।