৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,রাত ১:৫২

পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে চলতি সপ্তাহেই : কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা কেজি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। একইসঙ্গে দাম কিছুটা কমতির দিকে থাকায় আরও দুই-তিন দিন বাজার পরিস্থিতি দেখে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আজ রোববার সকালে সচিবালয়ে নিজ অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।কৃষিমন্ত্রী বলেন, গত বছর দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ও মজুত ভালো ছিল। পেঁয়াজের দাম কম ছিল, কৃষকেরা কম দাম পেয়েছিল। সে বছর দাম বাড়বে, এই আশায় মজুত করে রাখা পেঁয়াজ পচে গিয়েছিল। কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সে জন্য এ বছর পেঁয়াজের কী অবস্থা আমরা দেখতে চাচ্ছি। কৃষকের কাছে, গুদামে ও আড়ৎদারের কাছে কী পরিমাণ পেঁয়াজ আছে, তা দেখতে গত ২-৩ দিন মাঠপর্যায়ের বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা খোঁজখবর নিয়েছে। মাঠ থেকে তথ্য পেয়েছি যে, যথেষ্ট পেঁয়াজ মজুত আছে। তবে, দাম আরও বাড়বে- এ আশায় বাজারে বিক্রি করছে না। এ ছাড়া কেবলই পেঁয়াজের মৌসুম শেষ হয়েছে। এ মুহূর্তে দাম বাড়ার কথা না। সিন্ডিকেটের হাত আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় মধ্যম আয়ের, সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত চাষির স্বার্থটা দেখতে চাচ্ছি। কারণ গত বছর কৃষকেরা দাম কম পাওয়ায় এ বছর পেঁয়াজের উৎপাদন কমেছে প্রায় ২ লাখ টনের মতো। আমরা উচ্চপর্যায়ে, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করছি। গভীরভাবে বাজার পর্যবেক্ষণ করছি। ২-৩ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে কিনা।

মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ খুবই পচনশীল ফসল। এটি রাখা কঠিন। পেঁয়াজ রাখা যায় না, শুকিয়ে যায়, পচে যায়। তবে আমরা কিছু প্রযুক্তি নিয়ে এসেছি, কীভাবে গুদামে রাখা যায়। যদি শেলফ লাইফ বাড়ান যেত, তাহলে আমাদের যে উৎপাদন হচ্ছে, তাতে পেঁয়াজ দিয়ে বাজার ভাসিয়ে দেওয়া যেত।

নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণ নেই

নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কোনো কারণ দেখছি না। আমার ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে না। তারা বাস্তবতা বুঝবে এবং একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সহযোগিতা দিবে।

মন্ত্রী বলেন, স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ কোনোদিনই আমরা কামনা করি না ও সহজভাবে নিতে পারি না। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার রয়েছে, আর ৬ মাস পর আরেকটি নির্বাচন হবে। সংবিধান অনুযায়ীই সেই নির্বাচন হবে।

কৃষিসচিবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের বৈঠক

যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাঁচা তুলা আমদানির ক্ষেত্রে দেশে আর পোকা-মাকড় মুক্তকরণ বা ফিউমিগেশন করতে হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি বলেন, এতদিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির ক্ষেত্রে দেশে পৌঁছানোর পর পোকা-মাকড় মুক্ত করে, বন্দর থেকে খালাসের ছাড়পত্র নিতে হতো। যুক্তরাষ্ট্র তুলা রপ্তানির আগে সে দেশে পোকা-মাকড়মুক্ত করে। সেটি দেশেও আরেকবার ফিউমিগেশন করা হতো। সে জন্য দুবার পরীক্ষা বা ডাবল ফিউমেগেশন বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ব্যবসায়ীরা অনেকদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর করে কাঁচা তুলা পোকামাকড়মুক্ত করার পদ্ধতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার সকালে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও দূতাবাসের প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক শেষে কৃষিসচিব এসব কথা বলেন।

এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও দূতাবাসের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলে বাণিজ্য প্রতিনিধি ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্রেন্ডন লিঞ্চ, সাউথ এশিয়ার ডিরেক্টর মেহনাজ খান, রিজিওনাল আইপি অ্যাটাশে জন কাবেকা, ঢাকার ইউএস দূতাবাসের ইকোনমিক চিফ জোসেফ গিবলিন, এগ্রিকালচার অ্যাটাশে মেগান ফ্রান্সিস, লেবার অ্যাটাশে লিনা খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • শেয়ার করুন