৯ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,রাত ১১:৩০

বঙ্গবাজারের পোড়া লোহা-টিন যাচ্ছে ভাঙ্গারি দোকানে

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

বঙ্গবাজারের আগুনের ঘটনায় পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। ব্যবসায়ী মালিক সমিতি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সম্মিলিতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাদের দোকান, তাদের জিনিসপত্র, কিন্তু তাদেরই এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। এই টাকা কোথায় যাবে, কীভাবে খরচ হবে, তার কিছুই তাদের জানানো হয়নি।

ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তি ৪০ লাখ টাকায় এসব ভাঙাড়ি জিনিসপত্র কিনে নিয়েছেন। বলা হচ্ছে, টেন্ডারের মাধ্যমে তিনি এই ভাঙাড়ি কিনেছেন। তবে সেই টেন্ডার প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয়েছে, সে ব্যাপারে কেউ কিছু বলেননি।

বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী শাহ আলম জানান, দুদিন ধরে উড়ো উড়োভাবে শুনলেও শুক্রবার গতকাল মার্কেটের সামনে এসে দেখেন, ট্রাকে ভরে পোড়া টিন ও লোহা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অথচ দোকানগুলো তাদের টাকায় তুলেছিলেন, সব মালপত্রও তাদের।

তিনি বলেন, ‘আমরা কিছুই জানি না। ছোট ব্যবসায়ী আমরা। বড় ব্যবসায়ীদের কাছে তো আমরা যেতে পারি না। তারা কীভাবে কী করবে, আমরা কিছুই জানি না। টাকা পাব কি না, তাও জানি না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমি এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য পাইনি। আমি ১৫ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। এসব ভাঙাড়ি কারা কীভাবে বিক্রি করেছে, এসব বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।

বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে অবস্থিত মহানগর মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি লোকমান খান কালবেলাকে বলেন, দোকান মালিক সমিতির সিদ্ধান্তে ও সিটি করপোরেশনের অনুমোদনে মার্কেটের পোড়া টিন, লোহা ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এই টাকা কী করা হবে, তা পরে সিদ্ধান্ত আসবে।

তবে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, এই ৪০ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কল্যাণ তহবিলে যাবে। এ ছাড়া যারা ব্যবসায়ীদের সাহায্য করতে চান, সব এই কল্যাণ তহবিলে যাবে। এই টাকা অবশ্যই ব্যবসায়ীদের কল্যাণে যাবে। এটা নিয়ে কোনো ঝামেলা হবে বা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩, ১৯ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলী কালবেলাকে বলেন, বঙ্গবাজারের আগুনের ঘটনায় সব পুড়ে যাওয়ার পর যেসব ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ী সমিতি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের নির্দেশে এই কাজ শুরু করা হয়েছে। যেসব ভাঙাচোরা জিনিস রয়েছে, তা টেন্ডারের মাধ্যমে ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এই টাকা ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য কাজে লাগানো হবে।

তিনি বলেন, আশা করছি খুব দ্রুতই ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নেওয়া হবে। ইচ্ছা আছে শনিবারের মধ্যে এসব ময়লা সরিয়ে রোববার থেকে ব্যবসায়ীদের বসার একটা ব্যবস্থা করা। যেন ঈদের মৌসুমে তারা ব্যবসা করতে পারেন।

অবশ্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের অন্ধকারে রেখে মাত্র ৪০ লাখ টাকায় ধ্বংসস্তূপ বিক্রি করা হয়েছে। চারটি মার্কেটের এসব লোহা, টিন, কলাপসিবল গেট পুড়ে গেলেও তা অন্তত দুই কোটি টাকার সম্পত্তি। ব্যবসায়ী নেতারা টেন্ডারের কথা বললেও কোথায়, কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় টেন্ডার হয়েছে, তা তারা জানেন না।

  • শেয়ার করুন