প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২
পৃথিবীর মতো মহাবিশ্বের অন্য কোনো গ্রহেও জীবনের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। আর এ নিয়ে অনেক বছর ধরেই চলছে গবেষণা। ২০২০ সালে মঙ্গল গ্রহে পা দেয় নাসার রোবট রোভার। সেখানে এলিয়েনের সন্ধান করছেন গবেষকরা। এর মধ্যে নাসার প্রকাশিত মঙ্গল গ্রহের এক ছবি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে নেট দুনিয়ায়।
গত ৭ মে মঙ্গল গ্রহের ছবিটি তোলে নাসার রোভার নামে রোবট। পরে এটি দ্রুতই নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ছবিতে একটি পাহাড়ের নিচে দরজার মতো গর্ত দেখা যায়। এ দেখে অনেকের মনে প্রশ্নও জাগছে যে সত্যি কি তবে মঙ্গল গ্রহে এলিয়েন আছে?
ব্রিটিশ ভূতত্ত্ববিদ নিল হগসন বলেন, ‘এই ছবিটি সবার মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে, এটা প্রাকৃতিকভাবে পাহাড় ক্ষয় থেকে সৃষ্টি হয়েছে।’
ফ্রান্সের ন্যান্টেস বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রহবিষয়ক ভূতত্ত্ববিদ নিকোলাস ম্যাঙ্গোল্ড বলেন, এটা কোনো দরজা হতে পারে না। কারণ এর উচ্চতা তিন ফুটেরও কম। এ ছাড়া এমনও হতে পারে, মঙ্গলবাসীর উচ্চতা অনেক কম, তাই দরজা ছোট—এটা বলেও উপহাস করেন তিনি।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো কোনো দরজা নয়। পাহাড়ের ক্ষয় থেকে প্রাকৃতিকভাবে এ গর্তগুলো তৈরি হয়েছে। গর্তগুলো বেশি গভীরও নয়।
ব্রিটিশ জিওসায়েন্স ফার্ম সার্কারের ভাইস প্রেসিডেন্ট হগসন বলেন, এই গর্তের ডানপাশ একটু উঁচু এবং বাঁ দিকটা একটু নিচু। এর ওপরে স্ট্র্যাটা নামে পাথরের স্তর রয়েছে। ধারণা করা হয়, ৪০০ কোটি বছর আগে এই পাললিক শিলাগুলো জমা হয়েছিল। মূলত বাতাসের প্রবল চাপের কারণে শিলাগুলো ক্ষয় হয় এবং দরজার আকার ধারণ করে। এ ছাড়া ছবিতে বেশ কিছু পাতলা ফাটলও লক্ষ করা গেছে।
তিনি বলেন, বায়ুপ্রবাহ ছাড়াও মঙ্গলে হওয়া ভূমিকম্প থেকেও এই গুহা ও ফাটলের সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, ২০১৮ সালের নভেম্বরে ও ২০২১ সালের শেষের দিকে মঙ্গল গ্রহে রেকর্ড পরিমাণে ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
জার্মানির ব্রেমেনের জ্যাকবস ইউনিভার্সিটির ভূতাত্ত্বিক অ্যাঞ্জেলো পিও রসি বলেন, এই ফাটল সত্যিই খুব সুন্দর। দরজা আকৃতির গুহাটি পাথরের ফাটল থেকে তৈরি হয়েছে। কেননা একই কারণে পৃথিবীর বুকেও এমন অনেক কাঠামো তৈরি হয়েছে।