৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,সন্ধ্যা ৭:৩৬

‘সামনে নির্বাচন, অপেক্ষা করুন: কাদের

প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২২

  • শেয়ার করুন

পল্লীর আভাস :

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, অপেক্ষা করুন। কে কত জনপ্রিয় প্রমাণ হয়ে যাবে। অপেক্ষা করুন, বাংলাদেশের মানুষ কী চায় প্রমাণ হয়ে যাবে। নির্বাচনের বিরুদ্ধে কেন বলেন? প্রমাণ করতে হবে নির্বাচন দিয়ে। শেখ হাসিনা জনপ্রিয়, তার সঙ্গে আছে বাংলাদেশের মানুষ। তার উন্নয়ন অর্জনে বাংলাদেশের মানুষ খুশি।’

রবিবার (২১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হতাহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেত্রী, আপনি অনেককে সেদিন ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার যারা মাস্টারমাইন্ড, একুশের আগস্টেরও মাস্টারমাইন্ড তারা। হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নান তার স্বীকারোক্তিতে বলেছে, হাওয়া ভবনের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে আমরা অপারেশন শুরু করেছিলাম। এ সত্য কি অস্বীকার করতে পারবেন?’

ওবায়দুল কাদের বলেন, পঁচাত্তরের সংশ্লিষ্টতা, বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা?। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে কে বলেছিল, ওয়েলডান মেজর ডালিম, ইউ হ্যাভ ডান এ গ্রেট জব। আজ সত্যকে অস্বীকার করবেন না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্কে অনেকেই কথা বলেন, আমাদের বন্ধু দেশগুলোও কথা বলেন। কেন বাংলাদেশে এই আবিষ্টতা? আমাদের অবসেশন আছে। এই দল (বিএনপি), তাদের প্রতিষ্ঠাতা, আমাদের পিতার হত্যার সাথে জড়িত। জাতির পিতার হত্যার সাথে জড়িত খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। বিচার রোধকারী ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স আইনে পরিণত করেছে পঞ্চম সংশোধনীতে। অস্বীকার করতে পারবেন? এই প্রশ্ন বহুবার করেছি, মির্জা ফখরুলের কাছে জবাব পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্কে যে উঁচু দেয়াল তৈরি করেছে, তা কখনও আর রাজনৈতিক সম্পর্কে ব্রিজ তৈরি করতে পারেনি। এই দেয়াল ৩ নভেম্বর এসে আরও উঁচু হয়েছে, একুশে আগস্ট এসে আরও উঁচুতে নিয়ে গেছে। তারপরও শেখ হাসিনা তাদের গণভবনে ডাকেন, সংলাপ করেন, টেলিফোনে কথা বলে অপমানিত হন।’

খালেদা জিয়ার পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর সময়ে ঘটনার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ছেলে মারা গেছে, শোকাহত মাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছুটে গিয়েছিলেন সান্ত্বনা দিতে। ঘরের দরজা বন্ধ, বাইরের গেট প্রধানমন্ত্রীর মুখের ওপর বন্ধ করে দেওয়া হলো। সেদিন ঘরের দরজা বন্ধ করে আপনারাই বাংলাদেশে রাজনৈতিক সম্পর্কের দেয়ালকে আরও উঁচুতে তুলেছেন। আপনারাই সেদিন প্রকারান্তরে সংলাপের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘তবু বঙ্গবন্ধুকন্যা আপনাদের সাথে দুই দফা সংলাপ করেছেন। আজকে মিথ্যা কথা বলেন, মিথ্যাচার করেন। জনপ্রিয়তা নাকি তলানিতে। জনপ্রিয়তা দেখবেন? এই কয়দিন তো আমরা কিছু করিনি, শেখ কামালের মাজারে, বঙ্গমাতার মাজারে, বঙ্গবন্ধুর ৩২ নাম্বারে, টুঙ্গিপাড়ায় জনতার যে ঢল সে বাঁধভাঙা স্রোত দেখেছেন?’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, পল্টনে আর প্রেস ক্লাবে নির্দিষ্ট জায়গায় সমাবেশ করে তলানিতে নিয়েছেন আমাদের জনপ্রিয়তা। আমি বলবো, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে পঁচাত্তর পরবর্তীকালে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এ সত্য বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্ব আজ এটা স্বীকার করে।’

তিনি বলেন, ‘আপনাদের বুকে ব্যথা, আপনাদের গা জ্বলে। আপনাদের যন্ত্রণা কোথায় আমরা জানি, একুশে আগস্ট মারতে পারেননি। তিনি কেন বেঁচে আছেন। একজনকে সরিয়ে দিতে হবে। এটাই আপনাদের চক্রান্ত। সেই চক্রান্ত এখনও চলছে। এই দলটি চিরদিন আমাদের শত্রু ভেবেছে। এই দল এত উদারতা দেখানোর পর শেখ হাসিনাকে শত্রু হিসেবে এরা বেছে নিয়েছে। এই দলের নেতারা সত্য কথা বলে না। এরা প্যাথলজিকাল লায়ার। এরা মিথ্যা কথা বলে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখানে ১৪ দলের নেতারা আছেন। এগুলো বলার দায?িত্ব শুধু আমাদের নয়, আপনাদের সকলের। একজন মানুষের কয়টা জন্মদিবস হয়? আগে কেক কেটে ভুয়া জন্মদিবস পালন করতো। আমরা ভেবেছিলাম এবার করবে না। ঠিকই ১৬ আগস্ট, আগের দিন কেক কাটেনি। ১৬ তারিখে বেগম জিয়ার জন্মদিনের দোয়া মাহফিল, কেক কেটেছেন।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বলবেন কী একটা মানুষের কয়টা জন্মদিবস? সর্বশেষ করোনা টেস্টে পাওয়া গেলো তার ষষ্ঠ জন্মদিবস। ১৫ আগস্ট কেন পালন করেন? এই ভুয়া জন্মদিবস-এর জবাব দিতে হবে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা বাংলাদেশের জনগণকে বলি, যেই দলের নেতার এত জন্মদিবস, তাকে কি বিশ্বাস করেন? তাদের বিশ্বাস করা যায়? তাদের ওপর আস্থা রাখা যায়?’

  • শেয়ার করুন