প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৩
ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনের ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েন টিকিটপ্রত্যাশীরা। সার্ভার জটিলতার কারণে টিকিট কাটতে পারেননি অনেকে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলে সার্ভার জটিলতাও শুরু হয়।
গত শুক্রবারের মতো গতকালও ব্যাপক চাহিদা ছিল উত্তরবঙ্গের ট্রেন টিকিটের। এদিকে সার্ভার জটিলতায় অনেকে ‘রেলসেবা’ অ্যাপে ঢুকতে পারেননি। অনেকে আবার অ্যাপে ঢুকতে পারলেও টিকিট বুকিং অপশনে ক্লিক করার পরে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকছে, পরবর্তী ধাপে সিলেক্ট হলেও টিকিট পারচেজ হয়নি অনেকের। ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে হেল্পলাইন’ নামক দেড় লাখ রেলযাত্রীর একটি ফেসবুক গ্রুপে নিজেদের নানা ভোগান্তি তুলে ধরেছেন যাত্রীরা।
এমডি জাভেদ নামে একজন লিখেছেন, দুই ঘণ্টা ধরে সার্ভারের এ অবস্থা লগইন করা যাচ্ছে না; কিন্তু টিকিট সেল হয়ে যাচ্ছে। বখতিয়ার রহমান নামে অন্য একজন লিখেছেন, কোনোভাবেই সার্ভারে ঢোকা গেল না। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গে স্পেশাল ট্রেন না দেওয়ার সমালোচনাও করছেন অনেকে। মাসুদ রানা নামে এক যাত্রী লিখেছেন, কী আশ্চর্য বিষয় সিলেটে টিকিট নেওর মতো মানুষ নেই। অথচ আমাদের উত্তরবঙ্গে ৮টার পর পরই টিকিট খুঁজে পাওয়া যায় না। তাহলে সিলেটে এত ট্রেন দেওয়ার মানে কি! ঈদ উপলক্ষেও তো রংপুর বিভাগের জন্য দুটি ট্রেন বেশি দিতে পারত! টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনে যাত্রীদের এ ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চেয়ে সহজ জেভির নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ দেবনাথকে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তথ্য বলছে, উত্তরবঙ্গের একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, লালমণি এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের টিকিট শেষ হতে সময় নেয় দুই ঘণ্টা। ঢাকা থেকে রাজশাহীতে চলে চারটি আন্তনগর ট্রেন পদ্মা, সিল্কসিটি, ধূমকেতু ও বনলতা এক্সপ্রেসের টিকিটও শেষ হয়ে সাড়ে ৯টার দিকে। যশোর ও খুলনাগামী সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেসে যশোরের মাত্র পাঁচ সিট খালি থাকলেও খুলনার প্রায় ২০০ সিট খালি রয়েছে। অন্যদিকে বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেসে খালি রয়েছে ২৪টি সিট।
সিলেট রুটের কালনী, পারাবত, জয়ন্তিকা, উপবন এক্সপ্রেসের টিকিট এখনো পাওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম রুটের চট্টলা, সুবর্ণা, সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের টিকিটও পাওয়া যাচ্ছে।
তবে ময়মনসিংহ, জামালপুর রুটের চলাচলকারী অগ্নিবীণা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, জামালপুর ও তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের চাহিদাও ছিল অনেক। তবে এ রুটের যাত্রীদের টিকিট কাটতে ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের সময় এ রুটের ৩ হাজার টিকিটের মাঝে মাত্র ১৫টি অবিক্রীত ছিল। অন্যদিকে ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা রুটের মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেসের দেড় হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। চাহিদা থাকলেও এ রুটে যাত্রীদের টিকিট কাটতে ভোগান্তির কথা শোনা যায়নি। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের সময় এ রুটের অবিক্রীত টিকিট ছিল ১৯টি।
সার্ভারে ধীরগতি হওয়ায় অনলাইন ট্রেনের টিকিট কাটতে ভোগান্তি দূর হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার। মাসুদ বলেন, ‘যেহেতু অনেক লোক হিট করছে, সার্ভারে চাপ বাড়ছে। হয়তো সেই কারণে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে যাচ্ছে। এটি স্বাভাবিকভাবেই ঠিক হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান যে সিস্টেম রয়েছে তাতে প্রতি মিনিটে একসঙ্গে ৮ হাজার লোক টিকিট কাটতে পারবে। সেখানে প্রতি মিনিটে যদি হিট পড়ে ১ লাখ, যেহেতু এখন পর্যন্ত ১৩ লাখ ৭০ হাজারের মতো হিট পড়েছে; এ কারণে হয়তো টিকিট কাটার হার কম।’ মাসুদ আরও জানান, সার্ভার সমস্যা স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসবে আস্তে আস্তে। সবাই টিকিট কাটতে পারবেন।