২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার,রাত ১২:০৭

COP30: বিশ্ব জলবায়ু সংকট মোকাবেলার সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক সমাবেশ

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

রােহান হোসেন : আসন্ন COP30 সম্মেলনটি ২০২৫ সালের শেষ ভাগে ব্রাজিলের কোইনটানা রো শহরে অনুষ্ঠিত হবে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন হিসেবে গণ্য, যেখানে প্রায় ২০০টিরও বেশি দেশ অংশগ্রহণ করবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও তার বিরুদ্ধে করণীয় পদক্ষেপ নির্ধারণের ক্ষেত্রে COP সম্মেলনগুলো অনন্য ভূমিকা পালন করে আসছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, কার্বন নিঃসরণ কমানো, নবায়নযোগ্য শক্তি উৎস প্রসার, এবং জলবায়ু অভিযোজন নিয়ে এখানে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।

বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত পরিবর্তনের কারণে মানুষ, প্রকৃতি ও অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রবল বন্যা, দীর্ঘদিনের খরা, সমুদ্র স্তরের উত্থান, প্রাণবৈচিত্র্যের সংকট—এইসব বিষয় এখন এক নতুন গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ। COP30 সম্মেলনে এসব সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে তা নির্ধারণ করা হবে।

বিশেষভাবে উন্নয়নশীল ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো, যেমন বাংলাদেশ, নিজেদের বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা, নদী ভাঙন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের উপর ক্ষতিসাধন, এবং জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মোকাবেলায় ইতোমধ্যে নানা অভিযোজন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। COP30 এ এসব প্রকল্প ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করার মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও আর্থিক সহায়তা পেতে আগ্রহী।

বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ ও অভিযোজনের জন্য নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি উন্নয়ন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন। এই উদ্যোগগুলোর সফলতা ও সীমাবদ্ধতাও COP30 এর আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে।

COP30 এ বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে কার্বন নির্গমন হ্রাস, পরিবেশ বান্ধব নীতি গ্রহণ, আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি, এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য প্রযুক্তি স্থানান্তর নিশ্চিতকরণে। উন্নত দেশগুলোর করণীয় দায়িত্ব ও দাতব্য অর্থায়ন কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।

বিশ্বের বিজ্ঞানীরা ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, COP30 একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ঐক্য ও সমন্বিত কর্মপরিকল্পনার নতুন অধ্যায় শুরু করবে। সম্মেলনটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষ অবদান রাখবে এবং বিশ্ববাসীকে একটি সবুজ ও নিরাপদ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাবে।

বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো COP30-কে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে যাতে তারা তাদের দাবিগুলো শক্তভাবে তুলে ধরতে পারে এবং বৈশ্বিক জলবায়ু নীতিতে সমতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাতে পারে। জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া কার্যকর সমাধান অসম্ভব। COP30 সেই বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্ট করবে।

  • শেয়ার করুন