৯ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,দুপুর ২:৪৪

মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে সেসব সংগঠনকে সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেনঃপ্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২২

  • শেয়ার করুন

ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে সেসব সংগঠনকে সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বসে দ্রুত সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেন তিনি।

 

আগামী রোববার সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যৌথ সভা হবে। সেখানে সম্মেলনের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া সভায় প্রধানমন্ত্রী আগামী ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সারা দেশের জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন। কেউ সম্মেলন করতে না চাইলে বা সম্মেলন না করলে প্রয়োজনে তাদের কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

 

গতকাল শুক্রবার দলটির কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা এসব নির্দেশনা দেন। এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তারই সভাপতিত্বে এই সভা শুরু হয়ে চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। সভার বিরতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণভবনের বাইরে এসে সাংবাদিকদের জানান, আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

 

বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক সদস্য জানান, আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, তাঁতী লীগ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্রলীগের সম্মেলনের প্রসঙ্গ এলে দলের সভাপতি মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলনের তারিখ দ্রুত ঠিক করার জন্য নির্দেশনা দেন। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করতে দলের সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

এ প্রসঙ্গে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগেই দলের মেয়াদোত্তীর্ণ সব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে। নেত্রী দলের সাধারণ সম্পাদককে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন।

 

জানা যায়, পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের আগে দলকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দলের যেসব ইউনিটে সম্মেলন সম্পন্ন হয়নি সেগুলো শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভাপতি। এ ছাড়া কোথাও দলীয় কোন্দল থাকলে সেগুলো দ্রুত নিরসনের নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।

 

আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন খুব সহজ হবে না সে ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যাকে-তাকে মনোনয়ন দেবে না। যাচাই-বাছাই করে সার্ভে রিপোর্ট দেখে তবেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। বারবার যারা এমপি হয়েছেন, তারাই এমপি হবেন—এরকম হবে না।

 

এ প্রসঙ্গে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, সার্বিকভাবে আমাদের সংগঠনকে আরও গুছিয়ে তোলার জন্য কী কী করা দরকার, সেই নির্দেশনাগুলো আমাদের নেত্রী দিয়েছেন। আমরা সেভাবেই কাজ করব। আমাদের দলে প্রাতিযোগিতা আছে, তবে কোন্দল নেই। কোন্দল যদি কোথাও থাকে, তবে সেটি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।

 

দলের আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। নেত্রী কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

 

এদিকে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে উপকমিটি করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। গত জাতীয় সম্মেলনের আদলে এবারও উপকমিটিগুলো গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সূত্র জানায়, বিরোধী দলের আন্দোলনে সরকার কোনো বাধা দেবে না। তবে অগ্নিসন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকবে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে এখন থেকে দলীয় কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে বিভাগগুলোতেও জনসভা ও সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।

 

বৈঠক সূত্র জানায়, দলের কার্যনির্বাহী সংসদের নেতাদের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে এখন থেকেই কাজে নেমে পড়ার নির্দেশ দেন তিনি।

  • শেয়ার করুন