প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২২
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা সৃষ্টিসহ নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করে চলেছে। টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীদের বিনামূল্যে ইনসুলিন দেওয়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘আগামীতে নিজেকে সুরক্ষায় ডায়াবেটিসকে জানুন’ (Education to protect tomorrow) অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
শেখ হাসিনা বলেন, ডায়াবেটিস একটি প্রতিরোধে ও নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। কাজেই যাদের ডায়াবেটিস আছে এবং যাদের নেই উভয়কেই এর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে জানতে হবে এবং নিজেকে সুরক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর হাতেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়। তিনি স্বাস্থ্যকে সংবিধানের মূল অধিকারের অংশ হিসেবে সংযোজন, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যকে গুরুত্বদান, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসকদের চাকরিকে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ গঠনসহ বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির জনক পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে গত সাড়ে ১৩ বছরে স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সারাদেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্টিং স্টাফের সংখ্যা বহুলাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। মেডিকেল শিক্ষার প্রসারে নতুন নতুন মেডিকেল কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারাদেশে প্রায় ১৮ হাজার ৫শ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে- অতিরিক্ত ফাস্টফুড, চর্বিযুক্ত খাবার খেলে, শারীরিক পরিশ্রম ও নিয়মিত শরীর চর্চা না করলে, স্বাভাবিকের চেয়ে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য খাওয়া, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা ছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ ও ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করে একটি সুস্থ জাতি গঠনের মাধ্যমে আমরা জাতির জনক স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো- ইনশাল্লাহ। এসময় তিনি বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস-২০২২ উপলক্ষে নেওয়া সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।