অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামী সোমবার। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হওয়ার পর অসুস্থ অবস্থায় ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর তিনি ইন্তেকাল করেন। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, মোহাম্মদ হানিফ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন সংগ্রামী নেতা হিসেবে আমৃত্যু জনগণের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন দুখী মানুষের আপনজন। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হলে নিজের জীবন বাজি রেখে প্রিয় নেত্রীকে বাঁচাতে আত্মত্যাগের এ উদাহরণ সব রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর জন্য সবসময় অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, মোহাম্মদ হানিফ বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা ঘোষণার সময় থেকে জাতির পিতার একান্ত সহকারী হিসেবে অত্যন্ত একাগ্রতা ও বিশ্বস্ততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মোহাম্মদ হানিফসহ দলের নেতারা মানবঢাল তৈরি করে আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন। আওয়ামী লীগ তথা বাংলাদেশের একজন নিবেদিতপ্রাণ, ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে মোহাম্মদ হানিফ মানুষের হৃদয়ে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বেঁচে থাকবেন আজীবন।

এদিকে মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার আজিমপুর কবরস্থানে মেয়র হানিফের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ওই এলাকায় মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ এ শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেবেন। কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনসহ আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

মোহাম্মদ হানিফ ১৯৪৪ সালের ১ এপ্রিল পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পান। ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন ও মুক্তিযুদ্ধে তার ছিল বলিষ্ঠ ভূমিকা। তিনি ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া ঢাকা-১২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন মোহাম্মদ হানিফ। ১৯৭৬ সালে তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেছেন।