৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,সকাল ১১:৫৯

নায়ক ফারুক আর নেই

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৩

  • শেয়ার করুন

না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জানা গেছে, সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

নায়ক ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন জানান, অভিনেতা ফারুকের মরদেহ মঙ্গলবার ভোরের ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হবে।

নায়ক ফারুকের মৃত্যুতে শোবিজ অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন তার লাখো ভক্ত।

এদিকে, ফারুকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যু দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার অভিনীত চলচ্চিত্র দেশের সমাজ ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার অবদান দেশের মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। রাষ্ট্রপতি মরহুম আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। এ ছাড়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, পরিচালক সমিতিসহ অনেক সংগঠনই শোক প্রকাশ করেছে।

উল্লেখ্য, নায়ক ফারুক দীর্ঘদিন ধরেই সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জানা যায়, আট বছর ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। সর্বশেষ ২০২১ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরীক্ষায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন ফারুক। সিঙ্গাপুরে নিজের পরিচিত চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। হাসপাতালে ভর্তির কয়েক দিন পর তার মস্তিষ্কেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যর্থ হয়। সোমবার সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

প্রায় পাঁচ দশক ঢালিউডে অবদান রেখেছেন অভিনেতা ফারুক। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

তার উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে।

লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৬ সালে আজীবন সদস্যের সম্মাননা পান।

  • শেয়ার করুন