৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার,দুপুর ১২:২৯

শেয়ার বাজারে অস্থিরতা কাটছে না

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২২

  • শেয়ার করুন

গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবারও দর পতন ঘটেছে দেশের শেয়ার বাজারে। যদিও দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কারণে আগের সপ্তাহে সবেমাত্র চাঙ্গা হতে শুরু করেছিল এই বাজার। কিন্তু গত সপ্তাহে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের দাম বাড়ানোর পর থেকে বাজারে দরপতন শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩২ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ৬ হাজার ১৪৯ পয়েন্টে। শুধু তাই নয়,  লেনদেন কমে নেমে এসেছে ৬০০ কোটি টাকার নিচে। যদিও শেয়ার বাজারের টানা পতন ঠেকাতে গত ৩১ জুলাই শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দেয় বিএসইসি। ফলে বেঁধে দেওয়া ওই দামের নিচে নামতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারের দাম। ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর থেকে সূচক কিছুটা গতি ফিরে পায়। কিন্তু গত সপ্তাহে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের দাম বাড়ানোর পর থেকে দরপতন শুরু হয় বাজারে। সপ্তাহের চার কার্যদিবসের মধ্যে চার দিনই বাজারে সূচক কমেছে। এতে এক সপ্তাহেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি কমে গেছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে দেশের শেয়ার বাজারে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়। এর প্রতি কার্যদিবসই দরপতনের মধ্যে ছিল বাজার। অবশ্য আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই বাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এতে ডিএসইর বাজার মূলদন ২১ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা বেড়ে যায়। এমন বড় উত্থানের পরেই শেয়ার বাজার শুরু হয় দরপতন দিয়ে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ দরপতনের পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। গত ৫ আগস্ট প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ৩৪ বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, অকটেনে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোল ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করে সরকার।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত আসার পর গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস ৭ জুলাই দরপতনের মধ্যে পড়ে পুঁজি বাজার। পরের তিন কার্যদিবসও দরপতন হয়। এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ তিন হাজার ২৬৬ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল পাঁচ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেলো সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১০ হাজার ২১১ কোটি টাকা।

অপরদিকে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৭০ দশমিক ৮১ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ১১৯ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট। কমেছে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ২৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ৬৬ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট।

সবকটি সূচকের পতনের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৯৬ কোটি এক লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ১১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২১৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এছাড়া গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ৫৮৪ কোটি ৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৫ হাজার ৫৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে এক হাজার ৪৭৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। মোট লেনদেন বেশি হারে কমার কারণ পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বন্ধ থাকায় গত সপ্তাহে শেয়ার বাজারে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।

গেলো সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৩২ কোটি ৮৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ২৯ শতাংশ।

  • শেয়ার করুন